Saturday, March 15, 2025

ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, আ.লীগের কার্যালয়ে আগুন

আরও পড়ুন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুনসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতা লাঠি-সোটা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের সিরাজপুরের বাড়ি এবং কাদের মির্জার বড় রাজাপুরের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। বিক্ষুব্ধরা একে একে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়, মির্জা টাওয়ার, উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসসহ বেশ কয়েকস্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এছাড়া বসুরহাট জিরো পয়েন্ট, উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা বিভিন্ন ভাস্কর্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। নানা ধরনের লাঠি হাতে নিয়ে বিক্ষুব্ধ হাজার জনতা বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেলও বিস্ফোরিত হয়। এতে ইট-পাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন। তাদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দেশের মাটিতে পা রেখেই সেজদায় অবনত মুশফিক ফজল আনসারী

এছাড়া জেলা সদর, কবিরহাট, বেগমগঞ্জ, সদর, সেনবাগের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনের বাড়িতে হামলার ঘটনা চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বেলা আড়াইটার পর শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর হাজার হাজার মানুষ কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারে আনন্দ মিছিল শুরু করেন। একপর্যায়ে মিছিলকারীদের একটি অংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়ি বসুরহাট পৌরসভার বড় রাজাপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা এ সময় বাড়ির ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর শেষে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় কিছু ব্যক্তিকে বাড়ির ভেতর থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যেতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আরও পড়ুনঃ  জীবনে অনেক খুনের তদন্ত করেছি, এমন ঠান্ডা মাথার খুন দেখিনি: ডিবির হারুন

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, হামলা-ভাঙচুরের অল্প কিছু সময় আগে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সপরিবার বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশে চলে গেছেন।

সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদেরের বাড়ি ছাড়াও বসুরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তার ভাগনে ব্যাংক কর্মকর্তা ফখরুল ইসলামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন একদল লোক। রাত নয়টার দিকে ওই হামলার ঘটে। তারা ওই সময় বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করেন। একই সময় বাড়িতে থাকা একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেওয়া হয়। এই দুটি বাড়ি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কমপক্ষে ২০টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রেমিককে কুপিয়ে জখম, প্রেমিকা আটক

ছাত্রলীগ নেতা দিলীপ দাস ও জাকির হোসেন হৃদয়্সহ একাধিক নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্রলীগ করার কারণে আজ আমাদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। আমার মা-বাবা, ভাই-বোনের কোনো দোষ নেই। কিন্তু তাদেরও হুমকি দিয়েছে। নিজ দেশে আমরা এমন সময়ে পড়ব তা ভাবিনি।

কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিক্ষুব্ধ লোকজন ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। এছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িতেও হামলার খবর শোনা গেছে। তবে কেউ এ নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ