Saturday, March 15, 2025

গাজার দখল নেবে আমেরিকা, ফিলিস্তিনিদের এলাকা ছাড়া উচিত: ট্রাম্প

আরও পড়ুন

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর পরই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে বাসিন্দাদের অন্য দেশে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার তিনি স্পষ্টই বললেন, গাজার দখল নেবে আমেরিকা। বাসিন্দাদের এখন এলাকা ত্যাগ করা উচিত।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। এরআগে ওয়াশিংটন ডিসিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন নেতানিয়াহু। গত রোববার বিকেলে আমেরিকায় পৌঁছান তিনি। সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, তিনি মনে করেন না, গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো স্থায়ী ভবিষ্যত আছে। এবার এ নিয়ে আরও স্পষ্ট বার্তা দিলেন তিনি।

ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকা গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং এটি নিয়ে কাজ করব আমরা। আমরা গাজার মালিক হব এবং উপত্যকাটিতে থাকা সমস্ত বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র ভেঙে ফেলা হবে, এলাকা সমতল করা হবে এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলো অপসারণ করব।

আরও পড়ুনঃ  আত্মগোপনে থেকেও শেষরক্ষা হলো না যুবলীগ নেতার

গাজার নিরাপত্তা শূন্যতা পূরণের জন্য তিনি মার্কিন সেনা পাঠাতে ইচ্ছুক কিনা জানতে চাইলে, ট্রাম্প তা উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন, গাজার ক্ষেত্রে, আমরা যা প্রয়োজন তা করব। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা তা করব। আমরা এলাকাটি দখলে নিয়ে উন্নয়ন করতে যাচ্ছি।

ট্রাম্প বলেন, আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার অবস্থান দেখতে পাচ্ছি এবং আমি দেখতে পাচ্ছি, এটি মধ্যপ্রাচ্যের সেই অংশে, এমনকি সম্ভবত সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যেও দুর্দান্ত স্থিতিশীলতা বয়ে আনবে।

তিনি বলেন, এটি হালকাভাবে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত না। আমি যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই এই ধারণাটি পছন্দ করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই জমির মালিক হবে, উন্নয়ন করবে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে যা দুর্দান্ত হবে।

আরও পড়ুনঃ  আসামে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি, মৃত বেড়ে ১৫

সাবেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি অনেক মাস ধরে বিষয়টি নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করেছেন।
মঙ্গলবারের বক্তব্যের শুরুতে ট্রাম্প গাজাবাসীদের মধ্যপ্রাচ্যের এক বা একাধিক দেশে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিন। বলেন, আমি বলতে চাইছি যে, তারা সেখানে আছে কারণ তাদের কোনো বিকল্প নেই। তাদের কী আছে? এটি এখন ধ্বংসস্তূপের একটি বিশাল স্তূপ।

সিএনএন বলছে, গাজাবাসীদের স্থায়ীভাবে এই উপত্যকা ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে ট্রাম্পের পরামর্শ একটি উসকানিমূলক অবস্থান, যা তাঁকে ইসরায়েলের সবচেয়ে রক্ষণশীল রাজনীতিবিদদের কাছে প্রিয় করে তুলবে। তবে ইসরায়েলের প্রতিবেশীদের জন্য এটি একটি অপ্রস্তুত পদক্ষেপ, কারণ এসব দেশ বলেছে, তারা নতুন ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়।

মঙ্গলবার ট্রাম্প বিষয়টিকে মানবিক হিসেবে উপস্থাপন করে বলেন, কেউ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে থাকতে চাইবে তা বিশ্বাস করা অসম্ভব। একজন প্রতিবেদক তখন বলে ওঠেন, কারণ এটি তাদের বাড়ি। এ সময় ট্রাম্প বলেন, কেন তাঁরা ফিরে যেতে চাইবে? জায়গাটি নরক।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় তাঁবু ক্যাম্পে আবারও হামলা, ১২ নারীসহ নিহত অন্তত ২১

গাজার পরিবর্তে, ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য ভালো ও সুন্দর ভূমি দেওয়ার পরামর্শ দেন। বারবার ট্রাম্প স্পষ্ট করেই বলেন, তিনি এমন কোনও পৃথিবী দেখতে পাননি যেখানে ফিলিস্তিনিরা কখনও গাজায় ফিরে যাবে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি না যে, মানুষের গাজায় ফিরে যাওয়া উচিত। আমার মনে হয় গাজা তাদের জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। গাজা মানুষের বসবাসের জায়গা নয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক আগ্রাসন চালায় ইসরায়েল। গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় প্রায় ৬২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ভূখণ্ডটিতে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ